- নজরুলকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণার গেজেট প্রকাশে রিট শুনানির তালিকায়
- আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার জিডি
- পাকস্থলিতে ইয়াবা পাচার, নারীসহ দুই কারবারি আটক
- রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৫৬
- বিরোধী দল ও মতকে দমনে আরও হিংস্র রূপে সরকার
- ফরিদপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় বাস চলাচল শুরু
- বিকেলে ১৩ দলের সঙ্গে ইসির বৈঠক
- এবার নিষিদ্ধ ফুচকা বিক্রি
- পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা সেই যুবকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
- অভিনেত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ, গ্রেফতার অভিনেতা

» সুরক্ষা সরঞ্জামগুলোর সঠিক তদারকি, ব্যবহার এবং ধ্বংস না করা হলে ভাইরাসটির সংক্রমণ আরও মারাত্মক হতে পারে
প্রকাশিত: ০২. মে. ২০২০ | শনিবার

জাতির সংবাদ টোয়েন্টিফোর ডটকম ।।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে গ্লাভস, মাস্ক এবং গাউনসহ সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এ সুরক্ষা সরঞ্জামগুলোর সঠিক তদারকি, ব্যবহার এবং ধ্বংস না করা হলে ভাইরাসটির সংক্রমণ আরও মারাত্মক হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুরক্ষা সরঞ্জামগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার এবং ধ্বংস না করার কারণে অনেক চিকিৎসক এবং নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। সাধারণ মানুষের পিপিই (পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) পরার প্রয়োজন না হলেও তারা এখন ফুটপাতের বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিম্নমানের এবং অন্যের ব্যবহৃত প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করার মধ্যে দিয়ে নিজেরা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াচ্ছেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবরে বলা হয়।
গত ২৫ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা ব্যবহৃত সাদা গাউন এবং মাস্ক জব্দ করেছে। যেগুলো ধুয়ে এবং আয়রন করে বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মানুষের কেবল মাস্ক পরলেই হবে এবং ফুটপাতের বিক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। তারা বলছেন, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং যতটা সম্ভব ঘরে থাকা উত্তম। প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করে বাড়ির বাইরে বের না হয়ে ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্য ঘরে থাকাই সবচেয়ে ভালো।
ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা চ্যাপেল হিলের একদল গবেষক বলেন, ‘এ ভাইরাসটি পিপিইর মতো বস্তুগুলোতে কয়েক ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে এবং এসব একাধিকবার ব্যবহারের সময় সংক্রমণের ঝুঁকি রয়ে যায়।’
স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. সামিয়া তাহমিনা বলেন, ‘অনেকেই মাস্ক এবং গ্লাভস ব্যবহার করছে এই ভেবে যে তারা নিরাপদ। যদি এ প্রতিরক্ষা সরঞ্জামগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার না করা হয় এবং সেগুলো নিরাপদ উপায়ে ধ্বংস না করা হয় তবে এগুলোই ভাইরাস সংক্রমণের কারণ হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘গ্লাভস পরা যে কেউ করোনাভাইরাসের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত অনেক ধরনের বস্তু স্পর্শ করতে পারে এবং এভাবে ভাইরাসটি তার বাড়িতেও পৌঁছে যেতে পারে। যদি এ সংক্রমিত গ্লাভসগুলো ঠিকমতো সরানো না হয় এবং সঠিকভাবে নষ্ট করা না হয় তবে এটি ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটাবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘গ্লাভস, মেডিকেল মাস্ক, গগলস বা ফেস শিল্ড এবং গাউনসহ প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জামগুলো ব্যবহার ও নষ্ট করে দেওয়ার উপায় সম্পর্কে কিছু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা রয়েছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাত দিয়ে তিনি জানান, স্যানিটাইজার বা সাবান এবং পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কারের সম্মিলিত ব্যবহারের মাধ্যমেই কেবল মাস্ক কাজ করে। মাস্ক পরার আগে সবাইকে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। মাস্ক স্যাঁতসেঁতে হয়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই এটি পরিবর্তন করে নতুন মাস্ক পরতে হবে এবং একবার ব্যবহার উপযোগী মাস্কগুলো পুনরায় ব্যবহার করা উচিত নয়।
ডা. আতিকুর বলেন, ‘যদি সম্ভব হয় একবার ব্যবহারের উপযোগী মাস্ক এবং গ্লাভস ব্যবহারের পর একটি বদ্ধ বাক্সে ফেলে দেওয়া এবং তারপরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিত। একইভাবে, যে সব চিকিৎসক এবং নার্সরা করোনার রোগীদের দেখাশুনা করেন, তাদের পিপিই/গাউন ব্যবহার করা উচিত এবং স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার পরে এগুলো খুলে ফেলার আগে হাত পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। পিপিইগুলো ব্যবহারের পরে উপযুক্ত বর্জ্য পাত্রে ফেলে দেওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘সুরক্ষা সরঞ্জামগুলো ব্যবহার এবং নষ্ট করার বিষয়ে এগুলোই হলো ডব্লিউএইচওর প্রধান নির্দেশিকা। কেউ যদি এ নির্দেশিকাগুলো অনুসরণ না করে তবে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনতে পারে।’
ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের (ডিসিএমসিএইচ) মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘পিপিই, মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভসগুলো সঠিকভাবে তদারকি, ব্যবহার ও নষ্ট না করা হলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘সুরক্ষার জন্য অনেক দেশেই একবার ব্যবহারের মাস্ক এবং পিপিই ব্যবহৃত হয়। এখন যেহেতু একটি সংকট রয়েছে, সেহেতু নিরাপদ করার পরে আমরা সুরক্ষা সরঞ্জামগুলো পুনরায় ব্যবহার করতে পারি। কোনো করোনার রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরে ডাক্তার বা নার্সদের তাদের মাস্ক এবং পিপিই এবং গ্লাভস নিরাপদ উপায়ে নষ্ট করা উচিত। কেউ যদি পিপিইগুলো পুনরায় ব্যবহার করতে চান তবে তার উচিত হবে সেগুলো সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে সূর্যের আলোতে শুকিয়ে নেওয়া।’
ডা. হারুন বলেন, ‘অনেক চিকিৎসক এবং নার্স করোনাভাইরাস সুরক্ষা সরঞ্জামগুলোর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন নন। সুনামগঞ্জ থেকে এক ডাক্তার আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে তিনি কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগীদের দেখাশুনা করছেন। তিনি জানান, একটি ওষুধ সংস্থা থেকে তাকে দেওয়া পিপিই কিছুক্ষণ সূর্যের আলোতে রাখার পরে এটি পুনরায় ব্যবহার করেছেন। একই পিপিই পুনরায় ব্যবহার করার এটা নিরাপদ উপায় নয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের সুরক্ষা সরঞ্জামের নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করা কেননা তারাই করোনা মোকাবিলার ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা।’
সাধারণ মানুষের সার্জিক্যাল বা এন৯৫ মাস্ক এবং পিপিই ব্যবহার করার দরকার নেই বলে মনে করেন ডা. হারুন।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাপড়ের তৈরি মাস্ক ব্যবহার করা উচিত এবং পুনরায় ব্যবহারের আগে এগুলো সাবান এবং গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত। সাধারণ মানুষের গ্লাভসও ব্যবহার করার দরকার নেই তবে তাদের স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত এবং কোনো কিছু স্পর্শ করার পরে ভালো করে হাত ধোয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই মাস্ক এবং পিপিই এবং গ্লাভস নষ্ট করে ফেলার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস এবং পিপিইগুলো যেখানে সেখানে রাখা ঠিক নয়। কারণ এগুলো শিশু এবং অন্যান্যরা স্পর্শ করতে পারে। সুরক্ষা সরঞ্জামগুলো নষ্ট করে ফেলার আগে আমাদের এগুলো পলিথিন ব্যাগে জড়ো করে ঢেকে রাখা আবর্জনা বাক্সে ফেলে দেওয়া উচিত।’
সর্বাধিক পঠিত খবর
- ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বাসায় যাত্রাবাড়ীর ওসি
- আজি বসন্ত
- প্রধানমন্ত্রীর নিকট আর্থিক সহায়তা দাবিতে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
- শিবলী সাদিক এমপিকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দেখতে চায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা
- বাংলাদেশ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকারা ডেলিভারী সেবা ও অন্যান্য সেবার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের রোগীর সেবা করেও কোন স্বীকৃতি পাননি