- চাল নিয়ে চালবাজি, সবজির বাজারে স্বস্তি
- শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেড ও গার্ডিয়ান লাইফের মধ্যে গ্রুপ লাইফ ইন্স্যুরেন্স চুক্তি স্বাক্ষর
- রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণের দাবিতে অনাস্থা ভোট
- আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন সৈয়দ মারুফ নূরী
- ৩ লাখ ২৫ হাজার শ্রমিক বাঁচাতে কেরাণীগঞ্জ ওয়াশিং ফ্যাক্টরী মালিক সমবায় সমিতির সংবাদ সম্মেলন
- সাপাহারে উৎপাদিত বল সুন্দরী বরই কৃষিতে এক নতুন চমক
- সাপাহারে ইয়্যাবা ও গাঁজা সহ আটক-২
- শৈলকুপায় নির্বাচনী সহিংসতায় আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
- সাভার রাজ ফুলবাড়িয়ায় উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত
- বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের বন্ধুত্ব ও সৌহার্দতার বহিঃপ্রকাশ : এনাম
» ‘বন্ধুর সাথে রুমডেটে যেও না’
প্রকাশিত: ১১. জানুয়ারি. ২০২১ | সোমবার

।। আফরিন আপ্পি।।
রাজধানীর কলাবাগানে কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে। ফারদিনের যে হাতে আজ হাতকড়া উঠেছে সেই হাতটিতে থাকার কথা ছিল কোন কিশোর উপন্যাস। বন্ধুদের সাথে কখন, কোথায় খেলতে যাবে সে বিষয়ে হবার কথা ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু অসুস্থ ভাবনার ভীড়ে দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটেছে তার সব সুস্থ চিন্তার।
এ ঘটনা অনেক বড় বার্তা দিয়ে গেল আমাদের। বর্তমান প্রজন্ম এক দিকভ্রান্ত মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ দায় কি শুধু তাদের? নাকি পরিবার, সমাজ বা প্রযুক্তির? নাকি এর মূল আরো গভীরে? আসুন একটু বোঝার চেষ্টা করি।
১৭-১৮ বছরের একজন কিশোর-কিশোরী যখন বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে বাসায় তাদের ছেলে বা মেয়ে বন্ধুর সাথে একান্তে দেখা করে তখন এর পেছনের কারণ কি সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কী কারণে তারা অপরিণত বয়সে যৌনাকাঙ্ক্ষার দিকে ধাবিত হচ্ছে সেটা ভাববার বিষয়।
আমাদের দেশে স্বাস্থ্য ও যৌন শিক্ষা অতিমাত্রায় অবহেলিত। যে কারণে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে যৌনতা নিয়ে ভীষণ রকমের ফ্যান্টাসি কাজ করে।
ছোট বয়সে বাবা-ময়েরা সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছেন স্মার্ট ফোন। শুরুটা কার্টুন ও শিক্ষামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখার মাধ্যমে হলেও ধীরে ধীরে তা ভিন্ন দিকে ধাবিত হচ্ছে। এক পর্যায়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভুল জিনিস দেখতে শুরু করছে শিশু-কিশোররা। একসময় সেটাকেই জীবনের চরমতম লক্ষ্য বলে ধরে নিচ্ছে এবং সেটাকে সত্য মনে করে সেই পথে জীবনকে পরিচালিত করছে। আর তা থেকেই জন্ম হচ্ছে বড় বড় ভুলের।
যে বয়সে শিশু-কিশোরদের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, কিশোর উপন্যাস পড়ে সময় কাটানোর কথা। সে বয়সে তারা এখন ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্সট্রাগ্রাম ছাড়াও নানা ধরনের পর্নোসাইটে সময় কাটাচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের বিকৃত রুচির পরিবেশনা দেখে নিজের জীবনকেও সেভাবে কল্পনা করছে।
প্রযুক্তিকে আমরা কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবো না। অস্বীকার করতে পারবো না জেনারেশন গ্যাপের কথা। পরিবর্তীত পৃথিবীতে প্রযুক্তিকে সঙ্গী করেই আমাদের চলতে হবে। তবে সেই প্রযুক্তিকে পুঁজি করে যেন আমাদের সন্তানরা বিপথে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখার দায়িত্ব আমাদের বাবা-মায়ের। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের।
প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা, অপরের প্রতি সহানুভূতি-সহমর্মিতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কিশোর বয়সে এই অনুভূতি দোষের কিছু না। এ নিয়ে আপত্তিও নেই কোনো। তবে সে এক পবিত্র অনুভূতি। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ-ভালোবাসাটা সেখানে মুখ্য।
ঠিক একইভাবে যৌনতাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবে সেটা অবশ্যই পরিণত বয়সের জন্য। কারণ সব কিছুরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে, নিয়ম আছে, আছে ধর্মীয় বিধান। এর ব্যত্যয় ঘটলে দেখা দেয় বিপত্তি। এ কারণে পরিমিতিবোধটা খুব প্রয়োজন। কোথায় গিয়ে থামতে হবে এটা বোঝা আমাদের সবার জন্য জরুরী।
বর্তমানে দেশে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য মিলিয়ে এক মিশ্র সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। কিশোর-কিশোরীরা তাদের নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। নীতি নৈতিকতা ও বিচারবোধ থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে তারা। কিশোর-কিশোরীদের বলছি, বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করো, গল্প করো, আড্ডা দাও। কিন্তু সেটা অবশ্যই পাবলিক প্লেসে। কোন অবস্থাতে কখনোই কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একান্তে কোথাও যেও না। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার সম্পর্ক বজায় রাখো জীবন সুন্দর হবে। মনে রেখো শুধু যৌনতা কোন অবস্থাতেই ভালোবাসা হতে পারে না।বাবা
পিতা-মাতারা পারেন তাদের সন্তানদের সঠিক পথে পরিচালনা করতে। এজন্য পিতা-মাতার পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো হওয়া খুব জরুরী। একই সাথে সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, সন্তানকে পরিমিত সময় দেয়া, সন্তান কোথায় যাচ্ছে? কী করছে? কী দেখছে? খোঁজ রাখতে হবে। তাদের বন্ধুদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। সন্তানদের সুন্দরভাবে সময় কাটানোর জন্য তাদের সামনে নানা অনুষঙ্গ তুলে ধরতে হবে। তাদের সমস্যাগুলো শুনতে হবে। তাদেরকে বুঝতে হবে। শৈশব থেকেই তাদের মানবিক মূল্যবোধগুলো জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে।
একজন শিশু বা কিশোর তাদের অ্যাকাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি নাচ শিখবে, গান শিখবে, আবৃত্তি, অভিনয়, ছবি আঁকা, সাঁতার, গিটার, সাইক্লিং, কারাতে, প্রার্থনা, গল্পের বই এসব নিয়ে থাকবে। বাবা-মা পরিবার স্বজন বন্ধুদের নিয়ে সুন্দর সময় কাটাবে। এসব বিষয়ে শিশু-কিশোররা যত বেশি মনোযোগী হবে ততোটাই তারা নৈতিক জীবনাচরণে অভ্যস্ত হবে।
প্রত্যেক স্কুলে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ করা যেতে পারে। যাদের কাজই হবে শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ শেখানো, বিচারবোধ ও নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ এর শিক্ষা দেয়া। শিশু-কিশোরদের নৈতিক জীবন গড়তে অনেক বড় অবদান রাখতে পারেন বন্ধুর মতো শিক্ষকরা।
ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলো শিশু-কিশোরদের সচেতন করার জন্য অনেক বেশি প্রচার প্রচারণা চালাতে পারে।
একটা প্রজন্ম লক্ষ্যচ্যুত সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠছে। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনার, আমার, আমাদের সবার। আসুন তাদের দিকে সাহায্যের হাত প্রসারিত করে তাদেরকে সুস্থ সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করি।
সর্বাধিক পঠিত খবর
- ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বাসায় যাত্রাবাড়ীর ওসি
- আজি বসন্ত
- প্রধানমন্ত্রীর নিকট আর্থিক সহায়তা দাবিতে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
- সীমান্ত হত্যা বন্ধ এবং নিরাপদ সীমান্তের দাবিতে মানববন্ধন
- বিআইডব্লিউটিএ কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ঝুঁকি ভাতা প্রদান ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ কারীদের আর্থিক ক্ষতিপুরনের জোর দাবি